নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আরেকটা জীবন যদি পেতাম আমি নির্ঘাত কবি হতাম
আজ বিজয়ের দিনে
ঈশ্বর মনোলীনার সাথে আমার প্রথম দেখার ব্যবস্থা করে দিলেন।
প্রথম দেখাতেই সাহস করে মনোলীনার কাছে জানতে চাইলাম,
“কতদিন মনে মনে ডেকেছি তোমাকে , এতদিনে তোমার সময় হলো?”
একথা বলার সাথে...
আমাদের দক্ষিনের জানালা খুলতেই
একটা শীতল হাওয়া চোখে মুখে ছুঁয়ে যায়,
জানালার পাশঘেঁষা আম গাছটায় একটা কাক বসে ঝিমোচ্ছিল তখন,
আমার চোখে চোখ পড়তেই কাকটা আকাশে উড়ে গেল।
কাকের ডানার ঝাঁপটায় দুটি শুকনো আম...
চিরকাল আমাদেরই কেন গরিব থাকতে হবে!
ভাবতেই রাগের মাথায়
চোখ থেকে একফোঁটা আগুন ঝরে পড়ল মাটিতে,
আগুনের তাপে পুঁড়তে পুড়তে
আমার দিন যায় রাত চলে যায়,
মাঝে মাঝে ফায়ার সার্ভিস হর্ন বাজাতে বাজাতে চলে আসে...
মনে হচ্ছিল অনন্তকাল ধরে চাঁদ আর হারিকেনের আলোতে
মাটি খুঁড়ে চলছে কয়েকটা কোদাল।
অথচ মাটি আজ সারাদিনের বৃষ্টির জলে ভেজা!
মাঝে মাঝে আমার শরীরেও আছড়ে পড়ছে সেই ভেজা মাটির ফোঁটা।
নাকে মুখেও লাগছে ভেজা...
বিশ্বাস করুন
আমরা সুখেই আছি,
ঝগড়া করি
মান অভিমান করি
তবুও আমরা সুখেই আছি।
ডলারের দাম বাড়ায়
আমরা শুধু আগের চেয়ে একটু বেশি দরিদ্র হয়েছি,
আমাদের ধার দেনা একটু বেড়ে গেছে,
আশেপাশে ধার দেওয়ার মতো মানুষজন...
অনেক তো বয়স হলো,
তবুও আকাশে ঘুড়ি উড়তে দেখলেই মনটা উদাস হয়ে যায়।
আমার মন কেবলই ঘুড়ির সাথে উড়তে থাকে,
আর খুঁজতে থাকে ফ্রক পরা একটি মেয়েকে,
যে মেয়েটি দোতালার বাড়ির ছাদে দাঁড়িয়ে...
মহল্লার পরিচিত চায়ের দোকানটায় ঠায় দাঁড়িয়ে
মনোলীনাদের তিনতলার বারান্দায়
তাকিয়ে থাকতে থাকতে
পাঁচকাপ চা আর পাঁচটা সিগারেটের শেষটা ফুঁকতে ফুঁকতে
কয়েকদিনের না কামানো দাড়িতে বা\'হাতে হাতড়াতে হাতড়াতে ভাবছিলাম
ভালো কিছু স্যূট -টাই লাগবে
সাথে...
একজন নতুন কবি তার প্রথম কবিতার বই ছাপার জন্য
কোনো প্রকাশক না পেয়ে ঠিক দুপুর বারোটায়
বাংলাবাজারের চৌরাস্তায় দাঁড়িয়ে
পাণ্ডুলিপির পাতা বাতাসে উড়াতে উড়াতে
চিৎকার করে বলছিলো,
“ কবিতার বেঁচে থাকার জন্য...
চলে যাবে?
যাও।
কিছু কি ফেরত দিতে হবে তোমাকে?
তোমার সেই ফড়িং বয়স
যা উড়ত সবসময় আমার বুকে?
তোমার সেই বটতলার মাঠ,
যেখানে এখন বড় দালানকোঠা?
তোমার সেইসব চিঠি
যা ফ্রকের আড়ালে বুক থেকে বের করে দিতে?
তোমার ফুলতোলা...
পঞ্চাশ পার হলেই আয়নায় নিজেকেই আর পরিচিত মনে হয়না,
ঘরের দেয়ালে টানানো পুরনো ছবি দেখে মিলিয়ে নিতে হয় নিজেকে।
এখন খুব ভোর বেলায় পাঁচতলার জানালা দিয়ে
মন্ট্রিয়াল শহরের দালানকোঠার সারির দিকে তাকিয়ে...
ছেলেবেলায় মেলায় গিয়ে বন্ধুদের কেউ চরকিতে চড়ত
কেউ হাওয়াই মিঠাই কিনতো
কেউবা সার্কাসে খেলা দেখেত,
অথচ সেই ছেলেবেলা থেকেই বন্ধু শাহেদ মেলায় গিয়ে শুধু ঘুরত
আর মানুষের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকত,
কাউকে একবার...
মন খারাপ করা সময়ের সারাটা ক্ষণ
কে যেন আমার পেছন পেছন হাঁটে।
প্রতিবারই ঘাড় ঘুরিয়ে দেখার জন্য মনটা আনচান করে ওঠে।
দেখতে গিয়ে থমকে যাই,
যদি কেউ না থাকে!
আমার পেছন পেছন এখন...
ভোর বেলা হঠাৎ বৃষ্টির ঝাপটায়
খোলা জানালার জল
আমাকে আর ঘুম বিছানাটাকে ভিজিয়ে দিচ্ছে বারবার।
এমন বৃষ্টির দিনে তুমি বাড়িতে নেই,
থাকলে কি হতো আজ?
একটা দুটা জানালা বন্ধ করে কী হবে!
আকাশ...
দুহাজার বাইশে
পরিচিত অপরিচিত কোনো বাড়ির দরজা জানালা বন্ধ দেখলেই আমার মনে অশান্তি শুরু হয়!
রেল লাইনের পাশে দাঁড়িয়ে ছুটন্ত ট্রেন দেখলেই
আমার হাহাকার বুক ফুঁড়ে ছুটতে থাকে সেই ট্রেনের পিছন পিছন।
পরিচিত...
এই ঝুম বৃষ্টির দিনে
কাকটি একা একা উড়ে কতদূর যাবে!
সেই দৃশ্যটা দেখতে
জানালা খুলে দিতেই ঝাপটা জলে চোখ মুখ ভিজে গেল আমার,
আর ভিজে গেল টেবিলে পড়ে থাকা কিছু অসমাপ্ত চিঠি।
কত কথাই...
©somewhere in net ltd.