নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আরেকটা জীবন যদি পেতাম আমি নির্ঘাত কবি হতাম
আমার আত্মঘাতী বন্ধুটি তার শেষ চিরকুটে লিখেছিলো,
“নিজেকে আর টানতে ইচ্ছে করছে না
-প্রচন্ড আলসেমিতে পেয়েছে আমার,
তাই উড়াল দিলাম বাতাসে।”
দশতলা ছাদ থেকে বাতাসে উড়তে উড়তে
সে যখন সুতো কাঁটা ঘুড়ির মতো মাটিতে পড়লো,
কালো...
সকালবেলায় ঘর থেকে বের হতেই
সিঁড়িতে পড়ে থাকা একটা আধুলির গায়ে পিছলে পড়েছিলাম,
তারপর থেকে আমার সারা শরীর অদৃশ্য আধুলিতে ভরে গেছে।
সারাদিন ধরে মাথার মধ্যে শুধু ধাতব আধুলির ঝনঝনানি টের পাই।
দিন শেষে...
আজরাইল ফেরেশতা মাঝেমধ্যে হুটহাট ঘরের ভিতরে এসে ঢুকেন আর
লজ্জায় পড়েন বারবার।
উনার শরীর জলে ভিজে যায়,
ঘরের ভিতরে এক কোমড় জলে দাঁড়িয়ে হতাশ হয়ে তিনি আমার দিকে তাকান।
ম্যাপললিফ পাতার মতো ঝরে পড়ে...
মনোলীনা,
অনেকদিন হলো দিনশেষে বাড়ি ফিরতে গেলে প্রায়ই হারিয়ে যাই,
কোনমতেই মনে করতে পারিনা আমার
বাড়ির ঠিকানা।
একে ওকে ডেকে জানতে চাই,
‘আমার বাড়ির ঠিকানটা কি বলতে পারবেন?’
এমনও দিন যায় কখনো কখনো বাড়ি ফিরতেই অনেকদিন...
প্রতিরাতে আমি ডুবে যাই অঘুমের গভীর এক হাওরে,
আমাদেরই একান্ত ঘুম বিছানায়।
কোন কুলকিনারা না পেয়ে
ডুবতে ডুবতে শেষবারের মতো
লাইফ জ্যাকেট ভেবে
তোমার নিঃসঙ্গ বালিশটাকে যখনই বুকে আঁকড়ে ধরি।
তখনই নিঃসঙ্গ বালিশটাও
তারচেয়ে...
এই শহরের লাজুক মানুষরা,
তোমরা তোমাদের ঘরের দরজা-জানালা আটকে অন্ধকারে শুয়ে থাকো আরো কিছুদিন।
যাতে করে অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে তোমাদের বুকে আর মাথায় পা দিয়ে মাড়িয়ে হেঁটে যেতে পারে কিছু ধূর্ত শেয়াল...
হঠাৎ হঠাৎ মনে হয়
আমার পেছন দিয়ে কে যেনো চলে গেলো চুপিচুপি;
না বলে, একদমই না বলে,
অথচ আমি জানলামই না।
পেছনে ফিরে তাকালেই আমি আর কাউকেই দেখিনা কখনো!
শুধু একটি হলুদ পালক পড়ে...
তুমি চলে যাওয়াতে আমার নিজস্ব কোন সমস্যা হয়নি একদম,
একবারের জন্যও সমস্যা হয়নি।
বিশ্বাস করো,
আমি কিন্তু সত্যি বলছি।
খাই দাই,সারাদিন অফিস করি,
বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেই
তারপর, তারপর;
রাত করে বাড়ি ফিরি।
শুধু রাতের ঘুম...
সময় দেখার জন্য এই শহরের সবচেয়ে উঁচু দালানটায় একটা ঘড়ি ছিলো একসময়,
বিকল হয়ে পড়ে আছে অনেকদিন থেকে সেই ঘড়ি।
শহরের মানুষের এটা টের পেতে পেতেই বহুদিন চলে গেছে,
তাইতো অসময় যাচ্ছে...
আমার আজকের কবিতাটি লিখেছিলাম দু’বছর আগে কথিত ক্রসফায়ারে নিহত কমিশনার একরামুলের মেয়ে দু’টোর জন্য,
আজ আবার দিলাম নিহত সিনহার মার জন্য।বারবার দেই
আর যাতে দিতে না হয় কোনদিন আমার এই কবিতা, এটাই...
মনোলীনা,
তুমি চলে যাচ্ছ,
বাতাসের মাঝে আমি দাবড়াতে দেখি
-অচেনা এক হাহাকার।
তুমি চলে যাচ্ছ,
চাঁদের বুড়ির দীর্ঘশ্বাসে রাতের আকাশে আমি শুনি,
-এক পরিযায়ী পাখির বিকট বিলাপ।
তুমি চলে যাচ্ছ,
তাই নদীর বুকে আমি দেখি,
-নদীর ডুবে...
আমার কেরানী বাবা আমার জন্মের পর,
সংসারে আমাদের কিছুটা ভালো রাখার জন্য,
অফিস ছুটির পরও
-দুটো টিউশনি শেষে রাত করে বাড়ি ফিরতেন।
এমনকি উনার অফিস ছুটির দিনগুলোতেও,
নিউমার্কেটের দুটো শাড়ির দোকানের হিসাবের খাতা...
কোট টাই পড়ে সকালে অফিসে যাবার জন্য শেষবারের মত আয়নায় তাকাতেই;
আমার নিজেরই অন্তিম মৃতদেহ ভেসে উঠলো চোখে।
অফিসের বদলে গাড়ি ঘুরিয়ে চলে গেলাম আজিমপুর কবরস্থানে,
সেখানে গিয়েই পেলাম অচেনা একজনের জানাযা।
দাঁড়িয়ে পড়লাম...
আমি চল্লিশ বছরের আশেপাশের একজন পুরুষকে জানি
-যিনি বিগত প্রায় বিশ বছর যাবত শহরের বেশির ভাগ ডাকবাক্স তার বাড়িতে জমিয়েছেন,
এক কথায় চুরি করেছেন।
এই জন্য তাকে কয়েকবার থানা হাজত...
একজন বালক অদৃশ্য এক নাটাই -সুতো দিয়ে আকাশে এক অদৃশ্য ঘুড়ি উড়ায়;
প্রতিদিন বাড়ির পাশের মাঠটিতে বিকেলে বেলায়।
অফিস থেকে ফিরতি পথে প্রায় প্রতিদিনই বিকেলে তার সাথে দেখা হয় আমার,
কিন্তু কথা হয়না...
©somewhere in net ltd.